জ্বালানি কী এবং কীভাবে এটি বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়? কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় জ্বালানির উদাহরণ এবং তাদের ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন।
জ্বালানি কী?
জ্বালানি হলো এমন একটি পদার্থ, যেটি দহনের মাধ্যমে তাপ বা শক্তি উৎপন্ন করে। মানুষের দৈনন্দিন জীবন থেকে শুরু করে শিল্প, যানবাহন ও বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানির ভূমিকা অপরিসীম। জ্বালানি থেকে উৎপন্ন শক্তিই আধুনিক সভ্যতার চালিকা শক্তি।
জ্বালানির শ্রেণীবিভাগ
স্বাভাবিক চাপ এবং তাপমাত্রার ভিত্তিতে জ্বালানিকে প্রধানত তিন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়:
১. কঠিন জ্বালানি
কঠিন জ্বালানি হলো এমন পদার্থ যেগুলো কঠিন আকারে থাকে এবং জ্বালিয়ে শক্তি উৎপন্ন করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে:
- কয়লা: যেমন লিগনাইট, অ্যানথ্রাসাইট, বিটুমিনাস কয়লা ইত্যাদি।
- কোক: কয়লা থেকে প্রস্তুত বিশুদ্ধ শক্তি উৎস।
- কয়লাজাত অঙ্গার: আগুন নিভে যাওয়া কয়লার অবশিষ্টাংশ।
- কাঠ ও কাঠকয়লা: প্রচলিত প্রাকৃতিক জ্বালানি।
২. তরল জ্বালানি
তরল জ্বালানি হলো এমন পদার্থ যা তরল আকারে থাকে এবং সহজে জ্বালানো যায়। এর মধ্যে প্রধানত:
- পেট্রোলিয়ামজাত দ্রব্য: যেমন পেট্রোল (গ্যাসোলিন), জ্বালানি তেল, কেরোসিন, বেঞ্জল, কোল টার, টার অয়েল ইত্যাদি।
- এগুলো সাধারণত পেট্রোলিয়াম পাতন প্রক্রিয়ায় তৈরি হয় এবং যানবাহনে, শিল্পে ব্যবহৃত হয়।
৩. গ্যাসীয় জ্বালানি
গ্যাসীয় জ্বালানি হলো গ্যাস আকারে থাকা পদার্থ যা জ্বালিয়ে শক্তি উৎপন্ন করে। এর মধ্যে রয়েছে:
- প্রাকৃতিক গ্যাস: যা ভূগর্ভস্থ গ্যাস ক্ষেত্র থেকে আহরিত।
- পেট্রোলিয়মজাত গ্যাসীয় পদার্থ।
- শিল্প-উৎপাদিত গ্যাস: যেমন কোক-ওভেন গ্যাস, উদক গ্যাস ইত্যাদি।
- লিকুইফায়েড পেট্রোলিয়াম গ্যাস (LPG): প্রোপেন ও বিউটেনকে চাপ প্রয়োগে তরল করে বাজারজাত করা হয়।
জ্বালানির ব্যবহার
- শিল্প: বিদ্যুৎ উৎপাদন, ধাতু গলানো, বিভিন্ন কারখানায় তাপ এবং শক্তি উৎস।
- যানবাহন: গাড়ি, ট্রাক, বিমান ও জলযানে জ্বালানির ব্যবহার।
- গৃহস্থালি: রান্না, গরম পানি এবং তাপ উৎপাদনে LPG ও কাঠকয়লার ব্যবহার।
- কৃষি: কৃষি যন্ত্রপাতি চালানো এবং পানির সেচে শক্তি সরবরাহ।
জ্বালানি হলো আমাদের দৈনন্দিন ও শিল্প জীবনের অপরিহার্য শক্তি উৎস। কঠিন, তরল ও গ্যাসীয় জ্বালানি তিন প্রকারে বিভক্ত হলেও প্রত্যেকটিরই নিজস্ব গুরুত্ব ও ব্যবহার রয়েছে। তবে পরিবেশ সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানির দিকে ঝুঁকতে হবে।