জীবাশ্ম কাকে বলে ?

জীবাশ্ম কি? সৃষ্টি প্রক্রিয়া ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বিস্তারিত

জীবাশ্ম কীভাবে সৃষ্টি হয়? জীবাশ্মের উৎপত্তি, অবস্থান এবং শিলার মধ্যে জীবাশ্মের গুরুত্ব সম্পর্কে সহজ ভাষায় বিস্তারিত জানুন।

জীবাশ্ম কাকে বলে ?

জীবাশ্ম হলো এমন এক প্রাকৃতিক পদার্থ যা কোনো জীবদেহ শিলায় পরিণত হওয়ার ফলে তৈরি হয়। “জীবাশ্ম” শব্দটির উৎপত্তি হলো “জীব” অর্থাৎ প্রাণী বা উদ্ভিদ এবং “অশ্ম” অর্থাৎ শিলা থেকে। অর্থাৎ, জীবাশ্ম বলতে বুঝায় প্রাণী বা উদ্ভিদের মৃতদেহের ধীরে ধীরে শিলায় রূপান্তরিত হওয়া অবস্থা।


জীবাশ্মের সৃষ্টি প্রক্রিয়া

জীবাশ্ম সাধারণত পাললিক শিলায় পাওয়া যায়। নদী, সমুদ্র বা হ্রদের তলায় মাটি ও পলির স্তর ক্রমশ জমে যায়। এই স্তরগুলোর মধ্যে বিভিন্ন জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেহও ধীরে ধীরে চাপা পড়ে জমাট বেঁধে, সময়ের সাথে সাথে কঠিন শিলায় রূপান্তরিত হয়। এই প্রক্রিয়ায় জীবাশ্ম গঠিত হয় এবং জীবাশ্মের ছাপ শিলাস্তরের ওপর স্পষ্টভাবে দেখা যায়।

অন্যদিকে, আগ্নেয় শিলায় সাধারণত জীবাশ্ম পাওয়া যায় না। কারণ আগ্নেয় শিলা তৈরি হওয়ার সময় প্রচণ্ড তাপমাত্রার ম্যাগমা বা গলিত পাথরের মধ্যে প্রাণী বা উদ্ভিদ ঢুকলে তা পুড়ে নষ্ট হয়ে যায়।


জীবাশ্মের বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব

  • জীবাশ্ম থেকে প্রাচীন জীব ও পরিবেশের ইতিহাস জানা যায়।
  • এটি জীবাশ্ম জ্বালানী যেমন কয়লা, পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত।
  • জীবাশ্মের ছাপ শিলাস্তরে জীববৈচিত্র্যের প্রমাণ বহন করে।
  • জীবাশ্ম ভূতত্ত্ব ও প্রাকৃতিক ইতিহাস গবেষণায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

জীবাশ্ম হলো অতীতের জীবজগতের এক অমূল্য ধারা, যা বিভিন্ন জলজ পরিবেশে পলি ও মাটি জমার মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে শিলায় পরিণত হয়। এই প্রক্রিয়া আমাদের পৃথিবীর প্রাচীন জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশগত পরিবর্তনের তথ্য দেয়। জীবাশ্মের গবেষণা থেকে আমাদের প্রকৃতির ইতিহাস ও রূপান্তরের গোপন কথা জানা সম্ভব হয়।