গ্রীন হাউস এফেক্ট কি ?

গ্রীন হাউস এফেক্ট কী? কারণ, গ্যাস ও গ্লোবাল ওয়ামিংয়ের সম্পর্ক

গ্রীন হাউস এফেক্ট কী এবং এটি পৃথিবীর তাপমাত্রাকে কীভাবে প্রভাবিত করে? প্রধান গ্রীন হাউস গ্যাসসমূহ, প্রভাব এবং গ্লোবাল ওয়ামিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন।

গ্রীন হাউস এফেক্ট কী?

সূর্য পৃথিবীর যাবতীয় তাপের প্রধান উৎস। সূর্য থেকে নির্গত বিপুল সৌর শক্তির মাত্র একটি ক্ষুদ্র অংশ, প্রায় ১/২০০ কোটি ভাগ, ক্ষুদ্রতরঙ্গ আকারে পৃথিবীতে আসে, যাকে সূর্যরশ্মি তাপীয় ফল বলা হয়।

শীতপ্রধান বা নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে উদ্ভিদ রক্ষার জন্য গ্রীন হাউস বা কাঁচের ঘর নির্মাণ করা হয়, যা সূর্যালোক প্রবেশ করায় কিন্তু তাপ বের হতে দেয় না। এভাবেই পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের নিম্নস্তরে কার্বন ডাই অক্সাইড (CO₂), জলীয় বাষ্প ও ধুলিকণা তাপ ধরে রাখে এবং এটি গ্রীন হাউসের মতো কাজ করে।


গ্রীন হাউস গ্যাস ও তাদের ভূমিকা

পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইড (CO₂), জলীয় বাষ্প, ধূলিকণা ছাড়াও মিথেন (CH₄), ক্লোরাফ্লুরোকার্বন (CFC), নাইট্রাস অক্সাইড (N₂O), অ্যামোনিয়া ইত্যাদি গ্যাস তাপ শোষণ করে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়।

বায়ুমণ্ডলে এসব গ্যাস একত্রে কাজ করে পৃথিবীকে উষ্ণ রাখে, যার প্রভাবকে বলা হয় গ্রীন হাউস এফেক্ট


প্রধান গ্রীন হাউস গ্যাসসমূহ

গ্যাসগ্রীন হাউস এফেক্টে দায়িত্ব (%)
কার্বন ডাই অক্সাইড (CO₂)৫৫%
মিথেন (CH₄)১৫%
ক্লোরাফ্লুরোকার্বন (CFC)১৭%
নাইট্রাস অক্সাইড (N₂O)৫%

গ্লোবাল ওয়ামিং ও গ্রীন হাউস এফেক্ট

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নগরায়ণ, শিল্পায়ন, অরণ্য নিধন ইত্যাদি কারণে বায়ুমণ্ডলের গ্রীন হাউস গ্যাসের পরিমাণ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বাড়ছে, যা গ্লোবাল ওয়ামিং নামে পরিচিত।

বিজ্ঞানীরা মনে করেন গ্লোবাল ওয়ামিং আসলে গ্রীন হাউস এফেক্টের একটি প্রভাব বা নামান্তর।


গ্রীন হাউস এফেক্টের প্রভাব

  • বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটছে।
  • গ্লেসিয়ারের গলন, সমুদ্র স্তরের বৃদ্ধি এবং অতিবৃষ্টি বা খরা’র ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে।
  • জীববৈচিত্র্য ও কৃষিক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
  • মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলছে, যেমন গরমের কারনে বিভিন্ন রোগের বৃদ্ধি।

গ্রীন হাউস এফেক্ট হলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্যকারী প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া, যা গ্রীন হাউসের মতো কাজ করে। তবে অতিরিক্ত গ্রীন হাউস গ্যাসের নিঃসরণ এই প্রক্রিয়াকে বিপজ্জনক মাত্রায় নিয়ে যাচ্ছে, যার ফলে গ্লোবাল ওয়ামিং ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের সকলের দায়িত্ব এই প্রভাব কমানোর জন্য সচেতনতা সৃষ্টি করা ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া।