ন্যাপথালিন কি ?

ন্যাপথালিন কী? উৎস, গঠন ও ব্যবহার

ন্যাপথালিন কী এবং কীভাবে এটি তৈরি হয়? আলকাতরা থেকে ন্যাপথালিন আহরণ, এর রাসায়নিক গঠন, বৈশিষ্ট্য এবং দৈনন্দিন জীবনে এর ব্যবহার সম্পর্কে জানুন।


ন্যাপথালিন কী?

ন্যাপথালিন হলো রাসায়নিক সূত্র C10H8C_{10}H_8C10​H8​ বিশিষ্ট একটি জৈব যৌগ, যা প্রধানত আলকাতরা থেকে আহরণ করা হয়। এটি দুটি বেঞ্জিন রিং যুক্ত হাইড্রোকার্বনের শ্রেণীর পদার্থ। ন্যাপথালিন সাদা রঙের, তীব্র গন্ধযুক্ত, কেলাসাকার কঠিন পদার্থ এবং এর গলনাঙ্ক প্রায় ৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।


ন্যাপথালিনের উৎস ও প্রস্তুতি

ন্যাপথালিন মূলত আলকাতরার একটি অংশ। আলকাতরাকে আংশিক পাতন (ডিস্টিলেশন) করলে ১৭০ থেকে ২৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যে একটি পাতিত তরল পাওয়া যায়, যা ফেনল, ন্যাপথালিনসহ বিভিন্ন যৌগের মিশ্রণ। এই তরলকে ঠাণ্ডা করলে প্রথমে ন্যাপথালিন কঠিন আকারে আলাদা হয়। এরপর পরিস্রাবণের মাধ্যমে তরল থেকে এটি বিচ্ছিন্ন করা হয়।


ন্যাপথালিনের প্রকৃতি

  • এটি সাদা রঙের, উদ্বায়ী (volatile) এবং তীব্র গন্ধযুক্ত।
  • কঠিন কেলাসাকার গঠন বিশিষ্ট।
  • রাসায়নিকভাবে এটি দুটি বেঞ্জিন রিং (ডাইবেঞ্জো) যুক্ত একটি হাইড্রোকার্বন।
  • গলনাঙ্ক প্রায় ৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
  • জল ও অন্যান্য দ্রবণে সামান্য দ্রবণীয়।

ন্যাপথালিনের ব্যবহার

  • কীটনাশক: জামাকাপড়, কাগজপত্র ইত্যাদি পোকামাকড় থেকে রক্ষা করতে ব্যাপক ব্যবহৃত হয়।
  • রাসায়নিক প্রস্তুতি: নীল রঞ্জক পদার্থ, টেট্রালিন, ডেকালিন, ফলিক অ্যাসিড এবং ফলিক অ্যানহাইড্রাইড প্রস্তুতিতে ন্যাপথালিন ব্যবহার হয়।
  • জীবাণুনাশক ও দুর্গন্ধনাশক: ন্যাপথালিনের জীবাণু ধ্বংস ও দুর্গন্ধ দূর করার ক্ষমতা রয়েছে।
  • শিল্পে: বিভিন্ন জৈব দ্রাবক হিসেবে প্রয়োগ করা হয়।

সতর্কতা

ন্যাপথালিন উদ্বায়ী এবং বিষাক্ত হতে পারে। এটি শ্বাসপ্রশ্বাসে গেলে বা দীর্ঘমেয়াদি সংস্পর্শে থাকার ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। তাই ব্যবহারের সময় সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।


ন্যাপথালিন একটি গুরুত্বপূর্ণ জৈব যৌগ যা কীটনাশক, রাসায়নিক ও শিল্পে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এর উৎস ও রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানা থাকলে এর নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করা সহজ হয়।