উদ্ত্যাগী ও উদ্গ্রাহী পদার্থ কী এবং কীভাবে এগুলো বায়ুর জলীয় বাষ্পের সাথে বিক্রিয়া করে? উদাহরণসহ সহজ ভাষায় জানুন সোদক কেলাসের এই বিশেষ বৈশিষ্ট্য।
উদ্ত্যাগী পদার্থ কী?
উদ্ত্যাগী পদার্থ হলো এমন সোদক কেলাস, যা সাধারণ উষ্ণতায় বায়ুর সঙ্গে সংস্পর্শে আসলে তাদের কেলাস-জল বা জলীয় বাস্প ধীরে ধীরে ত্যাগ করে দেয় এবং অনিয়তাকার, শুষ্ক পদার্থে রূপান্তরিত হয়। এই প্রক্রিয়াটিকে উদ্ত্যাগ বলা হয় এবং এই ধরনের কেলাসকে উদ্ত্যাগী কেলাস বলা হয়।
উদাহরণস্বরূপ, সোডিয়াম কার্বোনেট (Na₂CO₃·10H₂O) একটি সাধারণ উদ্ত্যাগী কেলাস। এদের জলীয় বাস্প-চাপ সাধারণ বায়ুর জলীয় বাস্প-চাপের চেয়ে বেশি থাকে, ফলে খোলা বাতাসে রেখে দিলে এই কেলাসগুলো থেকে জলীয় বাস্প বের হয়ে যায়।
উদ্গ্রাহী পদার্থ কী?
উদ্গ্রাহী পদার্থ হলো এমন সোদক কেলাস, যেগুলো সাধারণ উষ্ণতায় বায়ুর জলীয় বাষ্প শোষণ করে নিজের মধ্যে দ্রবীভূত করে নেয়। এই প্রক্রিয়াটিকে উদ্গ্রাহিতা বলা হয় এবং এই ধরনের কেলাসকে উদ্গ্রাহী কেলাস বলা হয়।
সাধারণ উদাহরণ হলো সোদক ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড (CaCl₂·6H₂O) ও সোদক ম্যাগনেশিয়াম ক্লোরাইড (MgCl₂·6H₂O)। উদ্গ্রাহী কেলাসের জলীয় বাস্প-চাপ সাধারণ বায়ুর জলীয় বাস্প-চাপের চেয়ে কম থাকে, তাই তারা বাতাস থেকে জলীয় বাষ্প শোষণ করতে সক্ষম।
উদ্ত্যাগী ও উদ্গ্রাহী পদার্থের প্রধান পার্থক্য
| বৈশিষ্ট্য | উদ্ত্যাগী পদার্থ | উদ্গ্রাহী পদার্থ |
|---|---|---|
| কেলাস-জল আচরণ | বায়ুর থেকে জলীয় বাস্প ত্যাগ করে | বায়ুর থেকে জলীয় বাস্প শোষণ করে |
| জলীয় বাস্প-চাপ | বায়ুর জলীয় বাস্প-চাপের থেকে বেশি | বায়ুর জলীয় বাস্প-চাপের থেকে কম |
| উদাহরণ | সোডিয়াম কার্বোনেট (Na₂CO₃·10H₂O) | ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড (CaCl₂·6H₂O) |
উদ্ত্যাগী ও উদ্গ্রাহী পদার্থের ধারণা রসায়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো কেলাস পদার্থের জলীয় বাস্পের সঙ্গে পারস্পরিক ক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের স্থিতিশীলতা এবং পরিবেশের সঙ্গে অভিযোজনকে বোঝায়। এই বৈশিষ্ট্যগুলি বিভিন্ন শিল্প ও পরীক্ষাগারে প্রয়োগে সহায়ক।