হিরা কি ?

হিরা কী? গঠন, বৈশিষ্ট্য ও ব্যবহার

হিরা কী? এর ভৌত বৈশিষ্ট্য, কঠিনতা, গঠন এবং মূল্যবান রত্ন হিসেবে ব্যবহারের তথ্যসহ বিস্তারিত জানুন।


হিরা কী?

হিরা হলো কার্বনের একটি রূপভেদ যা পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন পদার্থ হিসেবে পরিচিত। বিশুদ্ধ অবস্থায় হিরা স্বচ্ছ, বর্ণহীন এবং কেলাসিত কঠিন পদার্থ। কখনও কখনও হিরার মধ্যে কোলো বা অন্যান্য রঙের অবশিষ্টাংশ থাকতে পারে, যা হিরাকে রঙিন বা অবিশুদ্ধ করে তোলে।


হিরার ভৌত বৈশিষ্ট্য

  • কঠিনতা: হিরা পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন পদার্থ। এর কারণে হিরা দিয়ে প্রায় যেকোনো পদার্থ কাটা যায় এবং এমনকি একটি হিরাকেই অন্য একটি হিরা কাটাতে পারে।
  • তাপ ও বিদ্যুতের পরিবাহিতা: হিরা তাপ ও বিদ্যুতের কুপরিবাহী হিসেবে কাজ করে।
  • উচ্চ প্রতিসরাঙ্ক: হিরার উচ্চ প্রতিসরাঙ্কের কারণে এটি অত্যন্ত উজ্জ্বল এবং দ্যুতিময় দেখায়।
  • আপেক্ষিক গুরুত্ব: কার্বনের রূপভেদের মধ্যে হিরা সবচেয়ে ভারী, যার আপেক্ষিক গুরুত্ব প্রায় ৩.৫।
  • উৎপাদন প্রক্রিয়া: হিরা উত্তপ্ত করলে ফুলে গিয়ে কয়লায় রূপান্তরিত হয়।
  • এক্স-রশ্মি নির্ণয়: এক্স-রশ্মির সামনে হিরা স্বচ্ছ হলেও কাচ অস্বচ্ছ, যার ফলে এক্স-রশ্মি ব্যবহার করে সহজেই কাচ থেকে হিরাকে পৃথক করা যায়।

হিরার রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া

উচ্চ তাপমাত্রায় অক্সিজেনের উপস্থিতিতে হিরা দহন করে কার্বন-ডাই-অক্সাইড (CO₂) উৎপন্ন করে। উদাহরণস্বরূপ: C+O₂→CO₂(প্রায় ৮০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায়)


হিরার ব্যবহার

  • রত্ন হিসেবে: হিরা বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান রত্ন, যার জন্য এর উজ্জ্বলতা ও কঠিনতা বিশেষভাবে আদর করা হয়।
  • পালিশের কাজে: হীরকচূর্ণ পালিশের জন্য ব্যবহৃত হয়, যা বিভিন্ন ধাতু ও পাথরকে চকচকে করে।
  • কার্বোনেডো: অবিশুদ্ধ ও কালো রঙের হিরাকে কার্বোনেডো বলা হয়, যেটির কোনো রত্নমূল্য নেই। তবে কাঠিন্যের জন্য এটি কাচ, পাথর ফোটানোর এবং কাটার কাজে ব্যবহার করা হয়।

হিরা পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন ও মূল্যবান পদার্থ, যা কার্বনের বিশেষ রূপ। এর স্বচ্ছতা, উজ্জ্বলতা এবং উচ্চ প্রতিসরাঙ্কের জন্য এটি গহনার পাশাপাশি শিল্পকর্ম ও প্রযুক্তিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। হিরার রাসায়নিক ও ভৌত বৈশিষ্ট্য বুঝে এর ব্যবহার বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতার সাথে করা হয়।