জুলের সূত্র কী? তাপীয় ফল ও বৈদ্যুতিক প্রবাহের সম্পর্ক সহজ ভাষায়

জুলের সূত্র কীভাবে বৈদ্যুতিক প্রবাহে উৎপন্ন তাপ নির্ধারণ করে? প্রবাহমাত্রা, রোধ ও সময়ের সম্পর্ক সহ সহজ ব্যাখ্যা এবং গাণিতিক সূত্র।

জুলের সূত্র কী?

বৈদ্যুতিক প্রবাহের কারণে পরিবাহীতে তাপ উৎপন্ন হয়—এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক বিষয়। জুল নামক বিজ্ঞানী এই তাপীয় ফলকে বিশদভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তার পর্যবেক্ষণগুলো তিনটি সূত্রে প্রকাশ করেন, যেগুলোকে জুলের সূত্র বলা হয়।


জুলের তিনটি সূত্র

১. প্রথম সূত্র:
পরিবাহীর রোধ (R) এবং সময় (t) অপরিবর্তিত রেখে, প্রবাহমাত্রা (I) যত বাড়ানো হবে, তত বেশি তাপ (H) উৎপন্ন হবে। তাপ উৎপাদন প্রবাহমাত্রার বর্গের সমানুপাতী।
গাণিতিকভাবে:
H ∝ I²(R,t অপরিবর্তিত)

২. দ্বিতীয় সূত্র:
প্রবাহমাত্রা (I) এবং সময় (t) অপরিবর্তিত রেখে, পরিবাহীর রোধ (R) যত বাড়ানো হবে, তত বেশি তাপ উৎপন্ন হবে। তাপ উৎপাদন রোধের সমানুপাতী।
গাণিতিকভাবে:
H∝R(I,t অপরিবর্তিত)

৩. তৃতীয় সূত্র:
প্রবাহমাত্রা (I) এবং রোধ (R) অপরিবর্তিত রেখে, সময় (t) যত বেশি রাখা হবে, তত বেশি তাপ উৎপন্ন হবে। তাপ উৎপাদন সময়ের সমানুপাতী।
গাণিতিকভাবে:
H∝t(I,R অপরিবর্তিত)


জুলের সূত্রের সম্মিলিত রূপ

এই তিনটি সম্পর্ককে একত্রে লিখলে পাওয়া যায়:
H = I²Rt

যেখানে,

  • H = উৎপন্ন তাপ,
  • I = বৈদ্যুতিক প্রবাহের মাত্রা,
  • R = পরিবাহীর রোধ,
  • t = সময়।

যদি t = 1 সেকেন্ড ধরা হয়, তাহলে তাপ উৎপাদনের হার পরিবাহীর রোধ এবং প্রবাহমাত্রার বর্গের গুণফলের সমানুপাতিক।


জুলের সূত্রের প্রয়োগ

জুলের সূত্র বিদ্যুতের তাপ উৎপাদনের হার নির্ণয়ে ব্যবহৃত হয়, যা বৈদ্যুতিক গরমার, হিটার, বৈদ্যুতিক বাতি, ইত্যাদি যন্ত্রের কাজ বোঝাতে সাহায্য করে। এছাড়া, বৈদ্যুতিক তারের নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা নির্ধারণেও এই সূত্র গুরুত্বপূর্ণ।


জুলের সূত্র বৈদ্যুতিক প্রবাহ ও তাপীয় শক্তির সম্পর্ককে সহজ ও স্পষ্টভাবে বর্ণনা করে। এটি আধুনিক বৈদ্যুতিক যন্ত্র ও প্রকৌশলে অপরিহার্য একটি মৌলিক সূত্র।