অম্লরাজ বা অ্যাকোয়া রিজিয়া কী? এর গঠন, রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য ও সোনা ও প্লাটিনম ধাতু দ্রবণের প্রক্রিয়া সম্পর্কে সহজ ভাষায় বিস্তারিত জানুন।
অম্লরাজ বা অ্যাকোয়া রিজিয়া কী?
অম্লরাজ, যাকে ইংরেজিতে ‘অ্যাকোয়া রিজিয়া’ (Aqua Regia) বলা হয়, হলো দুই ধরনের গাঢ় অ্যাসিডের মিশ্রণ — তিন অংশ গাঢ় হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড (HCl) এবং এক অংশ গাঢ় নাইট্রিক অ্যাসিড (HNO₃)। এই বিশেষ মিশ্রণ সোনা ও প্লাটিনমের মতো ধাতু দ্রবীভূত করতে সক্ষম, যা সাধারণত অন্যান্য অ্যাসিডে সম্ভব নয়।
অম্লরাজের রাসায়নিক গঠন ও প্রক্রিয়া
হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড ও নাইট্রিক অ্যাসিড মিশ্রিত হলে একটি শক্তিশালী অম্লরাজ তৈরি হয়, যা নাইট্রোসিল ক্লোরাইড (NOCl) এবং জায়মান ক্লোরিন (Cl₂) তৈরি করে।
রাসায়নিক সমীকরণ: 3HCl+HNO3→NOCl+2Cl2+2H2O
জায়মান ক্লোরিন সোনা বা প্লাটিনমের সঙ্গে বিক্রিয়া করে যৌগ লবণ গঠন করে, যার ফলে এই ধাতুগুলো দ্রবীভূত হয়।
অম্লরাজের ব্যবহার ও তাৎপর্য
- সোনা ও প্লাটিনম দ্রবণ: অ্যাকোয়া রিজিয়া হচ্ছে একমাত্র সাধারণ রাসায়নিক যা সোনা ও প্লাটিনমকে দ্রবীভূত করতে পারে।
- পরিষ্কারক হিসেবে: এটি ল্যাবরেটরি ও শিল্পক্ষেত্রে ধাতুদের পরিষ্কারে ব্যবহৃত হয়।
- রাসায়নিক গবেষণা: ধাতু বিশ্লেষণ ও সংমিশ্রণে অম্লরাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
সতর্কতা
অম্লরাজ অত্যন্ত তীব্র ও সক্রিয় অম্ল, তাই এটি ব্যবহারে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। অম্লরাজের বাষ্প ত্বক ও শ্বাসনালীর জন্য ক্ষতিকর। সুতরাং, নিরাপত্তা সরঞ্জাম পরিধান করে এবং ভাল বায়ুচলাচলের জায়গায় কাজ করা আবশ্যক।
অম্লরাজ বা অ্যাকোয়া রিজিয়া হলো গাঢ় হাইড্রোক্লোরিক ও নাইট্রিক অ্যাসিডের বিশেষ মিশ্রণ, যা সোনা ও প্লাটিনমের মতো মহামূল্যবান ধাতু দ্রবীভূত করতে সক্ষম। এর রাসায়নিক ক্রিয়া ও ব্যবহার রাসায়নিক শিল্প ও গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ। তাই অম্লরাজকে ‘রাজা অম্ল’ হিসেবেও অভিহিত করা হয়।